গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে করণীয় কি।
আপনারা হয়তো অনেকেই এই সমস্যাটার মধ্যে পড়েছেন। গর্ভাবস্থায় জ্বর হওয়া
মারাত্মক ক্ষতিকর। জ্বর হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। একজন স্বাভাবিক
মানুষের থেকে গর্ভাবস্থায় জ্বর হওয়া অনেকটা ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় যদি ১০০
ডিগ্রীর উপরে জ্বর আসে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আপনারা হয়তো অনেকেই জ্বর হলে করণীয় কি এবং কি করে জ্বর ভালো হবে সে সম্পর্কে জানেন না।চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে করণীয় কি এবং কিভাবে দ্রুত জ্বর ভালো হবে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে। কারণ অতিরিক্ত তাপমাত্রা গর্ভে শিশুর দিকে প্রভাব ফেলতে পারে।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে মা এবং গর্বের সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত
তাপমাত্রা শরীরে
আসলেই থার্মোমিটার দিয়ে দেখতে হবে ১০০ ডিগ্রীর কম আছে কি বেশি আছে। যদি ১০০
ডিগ্রীর বেশি থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বর শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়া মাত্র। সাধারণত ইনফেকশন হলে আমাদের শরীরে জ্বর
আসে। গর্ভাবস্থায় নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
গর্ভবতী মায়েদের জ্বর আসলেই সাথে সাথে জ্বর কমানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে
হবে। অনেক সময় জ্বর হলে সর্দি কাশি হয়ে থাকে এটা গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য
খুবই কষ্টকর।জ্বর আসলে বুঝতে হবে স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে অধিক তাপমাত্রা
শরীরে প্রভাব ফেলবে। এবং আপনাকে সাথে সাথে থার্মোমিটার দিয়ে দেখতে হবে।
গর্ভবস্থায় জ্বর হলে করণীয় কি
জ্বর যেহেতু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় সে ক্ষেত্রে জ্বরের পাশাপাশি
আরও বিভিন্ন রোগ ধরা দেয়। যদি শরীরে কোনো ইনফেকশন থাকে তাহলে ডাক্তারেরা
অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি
একদিন এর বেশি সময় ধরে জ্বর থাকে শরীরে তাহলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ
নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে গর্ভবতী মাকে বেশি পরিমাণে সতর্ক থাকতে হবে।
উচ্চারণ তাপমাত্রা জ্বর মা এবং শিশুর শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় জ্বর হওয়ার নানা কারণ হতে পারে তবে বিশেষ করে প্রসাবে ইনফেকশন
ডেঙ্গু জ্বর ইত্যাদির কারণে। জ্বর হলে একজন মাকে ওষুধ থেকে সতর্ক থাকতে হবে
কারণ গর্ভাবস্থায় ওষুধ খাওয়া সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত জ্বরের
কারণে ডাক্তারেরা শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায়
অনেক মায়েদের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্লাটিলেট কমে গিয়ে
গর্ভবতী মায়েদের ইন্টারনাল হেমারেজ এর ক্ষতি হতে পারে। এবং গর্ভের শিশু
প্রিম্যাচিউরড হয়ে জন্মগ্রহণ করে।
আরো পড়ুনঃ
বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে অভাবজনিত রোগের লক্ষণ
ডেঙ্গু জ্বর হলে একদমই ঘরে বসা যাবে না দ্রুত গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হবে
ডেঙ্গু হয়েছে কিনা। যদি ডেঙ্গু পজেটিভ আসে তাহলে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার
খেতে হবে। যদি ডেঙ্গু পজেটিভ হয় তাহলে মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব গায়ে ব্যথা এবং
শরীরে র্যাশ উঠবে। তরল খাবারের পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, প্রোটিন
জাতীয় খাদ্য ও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে গর্ভবতী
মায়েদের মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।
গর্ভাবস্থায় জ্বর কমানোর ঘরোয়া টিপস
গর্ভাবস্থায় জ্বর হওয়া এবং জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া
পদ্ধতিতে যথেষ্ট। জ্বর বেশি হলে চিন্তা না করে কিভাবে জ্বর হয়েছে সেদিকে
খেয়াল রাখতে হবে। তবে অতিরিক্ত জ্বর আসলে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া কিছু টিপসঃ
- গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাদ্য এবং বিশ্রাম নিতে হবে।
- একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে কপালে জলপটি দিতে হবে। জলপট্টি দিলে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যায়। কাপড় গরম হয়ে গেলে পানিতে ভিজিয়ে আবার কপালে জলপট্টি দিতে হবে।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে গোসল না করে কুসুম কুসুম পানিতে গোসল করতে হবে। এবং গোসল করতে না পারলেও কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর মুছে নিতে হবে। কিছুক্ষণের জন্য শরীরে তাপমাত্রা নিমিষেই দূর হয়ে যাবে।
- হালকা সুতি কাপড় ও ঢিলাঢালা পোশাক পরার চেষ্টা করতে হবে। কারণ ঢিলেঢালা পোশাক পড়লে শরীর আরামদায়ক লাগে।
- অতিরিক্ত উষ্ণ জায়গায় না থেকে শীতল জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন। ঘরে ফ্যান থাকলে আস্তে করে চালিয়ে দিতে পারেন।
বেশি ওষুধ না খেয়ে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শুধু প্যারাসিটামল খেতে হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে এ কিছু টিপস ফলো করলে কিছুটা হলেও জ্বর থেকে আরাম পেতে পারেন।
এবং শরীরের তাপমাত্রা আগের থেকে অনেকটাই কমে যাবে।
জ্বর হলে সর্দি এবং কাশি হতেই হয় তবে গর্ভাবস্থায় জ্বর সর্দি কাশি
গর্ভবতী মায়েদের জন্য অস্বস্তিকর। কিছু কিছু উপায়ে সর্দি কাশি ভালো করতে
পারবেন খুব সহজেই। গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি ভালো করতে পারেন কিছু ঘরোয়া
উপায়। সাধারণত সর্দি হলে শ্বাসনালির মারাত্মক ক্ষতি করে। সর্দির জন্য
শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পায়। সর্দি কাশি হলে রসুন ব্যবহার করতে পারেন কারণ রসুনের
মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিভাইরাল ও এন্টিসেপটিক যা শরীরের
ভেতরের ক্ষতিকর ভাইরাস বের করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও রসুন উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
বুকে কফ জমে থাকলে খুব ভালো করার জন্য কয়েক কোয়া রসুন এবং মধু মিশিয়ে খেয়ে
নিলেই দ্রুত গতিতে সর্দি ভালো হয়। তাছাড়াও কাশির জন্য মধু খেতে পারেন
মধুতে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাস যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে। মধুর সাথে পাতি লেবু উষ্ণ গরম পানির সাথে মিক্সড করে কাশির সিরাপ খেতে
পারেন দিনে দুই থেকে তিনবার খেলেই কাশি থেকে মুক্তি পাবেন। পাতিল লেবুর
মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম ভিটামিন সি যা কিডনি থেকে বজ্র পদার্থগুলো বের
করতে সাহায্য করে। এছাড়াও লবণ পানির গড়গড়া করলে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া
যায়।
জ্বর হয়েছে বুঝবেন কিভাবে
জ্বর বেশিরভাগই ইনফেকশনের জন্য হয়ে থাকে জানতে হবে ইনফেকশনগুলো কিসের মাধ্যমে
সৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রা থেকে উচ্চ তাপমাত্রায় শরীরে প্রভাব ফেলে
এমন তাপমাত্রাকে জ্বর বলা হয়। সাধারণত ৯৯ ডিগ্রির মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে বোঝা
যায় শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রয়েছে। তবে থার্মোমিটারে মেপে দেখতে হবে ১০০
ডিগ্রীর বেশি তাপমাত্রা আসলেই বুঝে নিতে হবে জ্বর হয়েছে। যদি শরীরে
তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রীর বেশি হয় তাহলে ভেবে নিতে হবে মারাত্মক জ্বর
এসেছে এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বর আসলে প্লেন প্যারাসিটামল
খেতে হবে। হঠাৎ করে ই সর্দি কাশি জ্বরের লক্ষণ হয়ে থাকে। গর্ভবতী মায়েদেরকে খেয়াল রাখতে হবে নিজের শরীরের দিকে। সুস্থ থাকার জন্য সব সময় খাবার খেতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমি আপনাদের জানিয়েছি গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে করণীয় কি এবং কিভাবে
ঘরোয়া পদ্ধতিতে জ্বর ভালো করবেন সে সম্পর্কে ভালোভাবে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। অনেক সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্বর হয়ে থাকে তবে গর্ভাবস্থায় জ্বর
হলে মা এবং শিশুর জন্য বিপদজনক। অতিরিক্ত জ্বর আসলে গর্ভবতী মায়েদের ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করতে হবে। যদিও আমার আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে
তাহলে আমার পেজটিকে ভিজিট করতে পারেন। কমেন্ট বক্সে নিজের মতামত জানাতে পারেন
ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url