ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, পছন্দের তালিকায় ছোট মাছ হোক বড় মাছ আমাদের খুবই পছন্দ। কিন্তু ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা খুব একটা জানিনা। প্রত্যেকটা খাবারের ওই পুষ্টিগুণ রয়েছে। ছোট মাছ এবং বড় মাছ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মাছ ভাত ছাড়া যেন বাঙালির চলেই না। প্রতিদিনের তালিকায় ছোট মাছ এবং বড় মাছ থাকবেই। চলুন জেনে নেই ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।


মাছে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ আরো বিভিন্ন উপাদান। বড় মাছের থেকে ছোট মাছ আরো বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। আপনাদের মাঝে ছোট মাছ এবং বড় মাছের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।

ভূমিকা

মানুষের অন্যতম প্রধান খাবার হচ্ছে আমিষ জাতীয়। আমি জাতীয় খাদ্যগুলোর মধ্যে ২৫ হাজার প্রজাতির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে মিষ্টি পানিতে ২৬০ এবং নোনা পানিতে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। নিয়মিত মাছ খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ পেটের অসুখ শরীর দুর্বলতা চোখে কম দেখা হাত পা ব্যথা ইত্যাদি। প্রতিনিয়ত মাছ খেলে বাতের ব্যথা থেকে সহজেই আরাম পাওয়া যায়। 
মাছ খেলে স্মৃতিশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। সামুদ্রিক মাছে আয়োডিন থাকে যা খেলে গলগন্ড রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা অনুযায়ী ছোট মাছ এবং বড় মাছকে কয়েক প্রকার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ঔষধ হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। শিশুদের জন্য মাছ খেলে মিলবে নানা উপকার। প্রতিনিয়ত কিংবা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন মাছ খাওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত মাছ খেলে হাঁপানি এবং ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণ

অনেক সময় ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের বিশেষ ধারণা থাকে না। তাই আজকে জানাবো ছোট মাছ এবং বড় মাছ কোনটা সব থেকে উপকারী তা সম্পর্কে। ছোট কিংবা বড় প্রতিনিয়ত মাছ খেলেই মিলবে উপকারিতা। ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণগুলোঃ

ছোট মাছের পুষ্টিগুণ

ছোট মাছ খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। প্রবা দে রয়েছে মাছে ভাতেই বাঙালি। দের মাছ ছাড়া চলেই না ছোট মাছ আমাদের পছন্দের তালিকায় থাকে। ছোট মাছের মাথা খেলে চোখে কম দেখলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ছোট মা চেয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। ছোট মাছ খেলে রাতকানা রোগ কম হয়। চোখের নতুন কোষ তৈরি করতে ছোট মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছোট মাছ খেলে বেশ কয়েকটা উপকারিতা মিলবে চলুন জেনে নেই সেগুলো কি কিঃ

প্রোটিনের ঘাটতি মিলেঃ মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। প্রতিদিন দেহের প্রোটিন মেটাতে খাদ্য তালিকায় ছোট মাছ রাখতে পারেন। নিয়মিত ছোট মাছ খেলে ইমিইনিটি এবং পেশীর জোর বাড়ায়। রোগব্যাধি থেকে দূরে রাখে ছোট মাছ।

হাড় মজবুত করেঃ অনেকের হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। বেশিরভাগ বয়স হলেই ক্ষয়জনিত রোগে ভুগেন। ছোট মাছ খেলে হাড়ের শক্তি বাড়ায় এবং হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগ ভালো করে। মাছের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ছোট মাছ রাখলে উপকৃত হবেন।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মাছের মাথা অত্যন্ত উপকারী।ছোট মাছের রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড জা মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ছোট থাকতেই শিশুদের ছোট মাছ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
দৃষ্টিশক্তিঃ ছোট মাছের দৃষ্টিশক্তির জন্য অত্যন্ত উপকারী। পুষ্টিবিদ্যা জানান চোখের জন্য বিশেষ করে মলা, ঢেলা, চান্দা, কাচকি, টেংরা, কুঠি ইত্যাদি মাসে বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি ভিটামিন এ ফসফরাস রয়েছে। এমনকি চোখে দৃষ্টি এবং চোখের কোষগুলোকে ভালো রাখে। পুষ্টিবিদরা আরো ছোট বাচ্চাদের চোখের সমস্যার জন্য প্রতিদিন মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

পুষ্টিবিদ্যা জানান ছোট মাছে বেশি পরিমাণে তেল মসলা দিয়ে রান্না না করা। বেশি পরিমাণে তেল মশলা দিয়ে রান্না করলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তার জন্য ছোট মাছ ভাপিয়ে হালকা তেল মসলা দিয়ে রান্না করলেই সবচাইতে বেশি উপকৃত হবেন।

বড় মাছের পুষ্টিগুণ

বড় মাছ স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা উপকারী না। ডাক্তারেরা বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছকে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে রাখেন। বড় মাছ খেলে দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। বড় মাছ খেলে হজম শক্তিতে বাধাগ্রস্থ হয়।

নিয়মিত মাছ খাওয়ার উপকারিতা

নিয়মিত মাছ খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবেন তার মধ্যে কয়েকটি জেনে নিন।
  • নিয়মিত মাছ খেলে হার্ট ভালো রাখে এবং হার্টের অসুখ থেকে সারাতে সাহায্য করে।
  • শরীরের প্রোটিনের অভাব পূরণ করে।
  • দৃষ্টিশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল কমে।
  • দেহের গাঠনিক কার্যকারিতা দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যায়।

সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার উপকারিতা

ছোট বাচ্চাদের সামুদ্রিক মাছ খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। শিশুদের মানসিক বৃদ্ধির এবং শারীরিক গঠনে ভূমিকা পালন করে। সামুদ্রিক মাছের রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন ডি উপাদান। প্রতিনিয়ত সামুদ্রিক মাছ খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। সামুদ্রিক মাছ বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের মুক্তি করে। সামুদ্রিক মাছ গুলো হচ্ছে ইলিশ কোরাল রূপচাঁদা বাইলা গলদা চিংড়ি লইট্টা ইত্যাদি মাছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল রয়েছে। গবেষণার দিক দিয়ে জানা গেছে সামুদ্রিক মাছ খেলে হার্ট অ্যাটাক স্টক উচ্চ রক্তচাপ এগুলোর ঝুঁকি একেবারেই কমিয়ে দেয়। এছাড়াও শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।

সামুদ্রিক মাছ খেলে কি কি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

সামুদ্রিক মাছ খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে হৃদরোগ কোলেস্টেরল, মস্তিষ্কের ক্ষমতা, দৃষ্টিশক্তি রোগ, প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি। চলুন এই রোগ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিইঃ

হৃদরোগঃ সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগ-৩ ফ্যাটি এসিড যা হৃদরোগ কমাতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলঃ বেশিরভাগ সময়েই মানুষ কোলেস্টেরলের পরে। সামুদ্রিক মাছ খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

মস্তিষ্কের ক্ষমতাঃ ছোট বাচ্চাদের দৈহিক বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্ক গঠন করতে সামুদ্রিক মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের সমস্যা ও ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগ ভালো করতে সামুদ্রিক মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ সামুদ্রিক মাছ দেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন রোগ থেকে বাচাই। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছের আয়োডিন থাকায় গলগন্ড রোগ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।

ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় নিত্যদিনের জন্য সামুদ্রিক মাছ রাখতে পারেন। সামুদ্রিক মাছ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারি।

মাছ খাওয়ার অপকারিতা

মাছ যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমন কিছু ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। প্রতিদিন বড়জাতীয় মাছ খেলে শরীরে নানা সমস্যা বাড়তে পারে। অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়ায় ঠিক না। বেশি পরিমাণে মাছ খেলে যা ক্ষতি হতে পারে জানুনঃ

ডায়রিয়াঃ অতিরিক্ত মাছের তেল খেলে হজমে বাধা গ্রস্থ হয়ে ডায়রিয়া হতে পারে। এছাড়াও পেট ফাঁপা বমি বমি ভাব অসস্তি এরকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এলার্জিঃ অনেকের মাছ খেলে এলার্জি সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে মাছ না খাওয়াই ভালো। এলার্জি হলে শরীরে বিপদজনক ক্ষতির সৃষ্টি করতে পারে। যে মাছগুলো খেলে এলার্জি হবে সে মাছগুলো থেকে দূরে থাকুন।

রক্তপাতঃ অতিরিক্ত মাথার তেলের জন্য রক্তপাত হতে পারে। মাছের তেল ভারি হওয়ায় নাক এবং আলসারের রক্তপাত হতে পারে।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আপনাদের মাঝে ছোট মাছ এবং বড় মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যদি আমার পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে উপকৃত হবেন। বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছ অত্যন্ত উপকারী। ছোট মাছ খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সামুদ্রিক মাছ ফলো দিয়ে রাখতে পারেন।কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

যদি, আমার পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে নিজের মতামত জানাতে পারেন। এরকম আরো সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমার পেজটিকে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। নিজে ভালো থাকুন এবং অন্য কেউ ভালো রাখুন। পৃথিবী হোক সুন্দরম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url