ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস রোগ থেকে বাঁচার উপায়
প্রিয় পাঠক, আজ আমি আপনাদের ডেইরি খামারে ম্যাসটাইস রোগ থেকে বাঁচার উপায়
সম্পর্কে আলোচনা করব। ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস স রোগ গুলো হচ্ছে গরুর ওলান ফোলা
রোগ। বেশিরভাগ সময় খামারে ম্যাসটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয় গাভী। এ রোগটি খামারে
মারাত্মক ক্ষতি ঘটাতে পারে। তবে কয়েকটি সমাধানের মাধ্যমে ডেইরি খামারে
ম্যাসটাইসিস টিভ রোগ থেকে বাঁচতে পারেন। আজ আমি আপনাদের জানাবো ডেইরি খামারে
ম্যাসটাইটিস রোগ থেকে বাঁচার উপায়।
ম্যাচটাইটিস রোগটি হচ্ছে গাভীর ওলানে টিস্যু প্রদাহ কে বলা হয়। ম্যাচটাইটিস রোগের কারণে গাভীর দুধ কমে যায় এবং চিরতরে ওলান নষ্ট হয়ে গাভী মারা যেতে পারে। এ রোগটি হওয়ায় ডেইরি খামারের অধিক দুধ প্রদানশীল গাভী। চলুন জেনে নেই ডেইরি খামারে মাছটাইটিস রোগ থেকে বাঁচার উপায়।
ভূমিকা
ডেইরি খামারে প্রধানত ২২ থেকে ৫৬ প্রকার ব্যাকটেরিয়া ও কয়েকপ্রকার ছত্রাক ও
মাইকোপ্লাজমা রোগে আক্রান্ত হয় ডেইরি খামারের শত শত গাভী। গাভীর ওলানের সরাসরি
নোংরা থেকে যে দুধ দোহাই তার হাত থেকে এই রোগটি হতে পারে। অধিক পরিমাণে দুধ চাপের
কারণে ম্যাসটাইটিস রোগটি হয়ে থাকে। বিশেষ করে এ রোগটি ডেইরি খামারে হয়ে থাকে।
ভালোভাবে জানতে হবে কি কি কারনে ম্যাসটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয় দুধাল গাভী।
আরো পড়ুনঃ টক জাতীয় ফলের গুনাগুন সম্পর্কে জানুন
এই রোগে আক্রান্ত হলে ডেইরি খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এবং গাভীর ওলান
ভালোভাবে পরিষ্কার করে দুধ গালতে হবে। পরিষ্কার মুক্ত কাপড় দিয়ে গাভীর ওলান
মুছে দিতে হবে। যদি পুরস্কার পরিচ্ছন্নভাবে গাভীর ওলান পরিষ্কার না করে দুধ কালো
হয় তাহলেম্যাসটাইটিস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।
ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস রোগ থেকে বাঁচার উপায়
ম্যাসটাইটিস হচ্ছে গাভীর ওলানে কোন সমস্যা দেখা দেওয়া বিজ্ঞানের ভাষা এটাকে বলা
হয় প্রদাহ। গাভীর ওজনে দুধ ঢালার পর ওলানের যে টিস্যুগুলো রয়েছে সেগুলো যদি কোন
কারণে আক্রান্ত হয় তাহলে গাভীর ওলান ফুলে গিয়ে দুধ উৎপাদনের বাধাগ্রস্ত হয়।
অনেক সময় ম্যাসটাইটিস রোগের কারণে গাভীর দুধ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। গাভীর ওলান
যদি সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে রাসায়নিক ওলেন প্রবেশ করে এতে ব্যাকটেরিয়া
ছত্রাক মাইকোপ্লাজমা,ফাঙ্গাস আক্রান্ত হয়ে নাইট্রাইট ম্যাসটাইটিস রোগটি হয়ে
থাকে। ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস রোগ থেকে বাঁচার উপায় গুলো চলুন জেনে নিই।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খামার
গরুর খামার প্রতিনিয়ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেইরি খামারের অনেকগুলো গরু
থাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে এর রোগটি ডেইরি খামারে বাসা বাধতে পারে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ডেইরি খামারে গাভীর সবসময় আরামে থাকতে পারে। গাভি যদি
সুস্থতা থাকে তাহলে ওয়াক্সটকসিন হরমোন ভালোভাবে নির্গত হয়ে বেশি দুধ উৎপাদনে
সাহায্য করে। পরিষ্কার খামারে ম্যাসটাইটিস রোগ কখনো বাসা বাঁধতে পারে না। তাই
গাভীর জন্য প্রয়োজন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন খামার। গরম সময়ে অতিরিক্ত গরম পড়লে
গাভী যাতে সুস্থতা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গাভীর জন্য অজৈব পদার্থর দিয়ে
বিছানা দিতে হবে অজৈব পদার্থতে বেশি ক্ষতিকর জীবাণু জন্মায় না।
পরিষ্কার ওলান
ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই গাভি ওলান
ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। গাভীর দুধ দোয়ানোর আগে পরিষ্কার
পানি দিয়ে দুধের বাটগুলো ধুয়ে নিতে হবে। যদি গাভীর ওলান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না
করে তাহলে দুধ দোহানোর সময় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো বাটের ভিতর ঢুকে যেতে
পারে। অনেক সময় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো মাটিতে ও গোবরে লেগে থাকে। গাভীর বাটে
অনেক সময় গোবর লেগে থাকে তাই দুধ দোয়ানোর আগে গাভি ওলান থেকে ময়লা আবর্জনা
পরিষ্কার করতে হবে।
গাভী ওলান পরিষ্কার করার সময় বেশি জোরে পানি ছিটানো যাবে না। কারণ পানি ছাটানোর
সময় গাভীর বাটে আঘাত লাগলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সিইউডোমনাস ব্যাকটেরিয়া
গুলো মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে থাকে। তাছাড়া গাভি ওলান পরিষ্কার করার পর পানি গুলো
জমিয়ে রাখা যাবে না।
ওলান পরীক্ষা
অনেক সময় গাভীর বাট ক্ষত হয়ে যাই। তার জন্য গাভীর দুধ দোহানোর পূর্বে ওলান
পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি গাভীর বাটে ক্ষত থাকে তাহলে দুধ দোহানো মেশিন ব্যবহার
করা একেবারে যাবে না। কারণ এসব বাঁটে ম্যাসটাইটিস রোগের লক্ষণ বেশি হয়। বাটে কোন
ধরনের ক্ষত দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গাভি ওলান পরিষ্কার করার পর মুছে ফেলা
ভালোভাবে দুধ পরিষ্কার করার পর জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। যদি গাভীর
ওলান মোছানোর কাপড় দিয়ে অন্যান্য গাভীর ওলান পরিষ্কার করা হয় তাহলে সে
গাভিটারও ম্যাসটাইটিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সম্ভব হলে এক একটা গাভীর জন্য
এক একটা পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করা ভালো। ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে যেন গাভীর
ওলানে কোন ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ লেগে না থাকে। বাট ভালোভাবে মুছে নেওয়ার পর
গাভীর দুধ দোহানো উত্তম।
খাদ্য ভিটামিন ই ফেলেনিয়াম ও খাদ্য ভাস
গাভির ওলানের জন্য ভিটামিন ই সেলেনিয়াম অত্যন্ত উপকারী। দৈনিক খাবারের সাথে
ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম গাভীর খাদ্যে দিতে হবে। দুধ দোহানোর পর গাভীকে খাবার
দিতে হবে। দুধ দোহনের সময় দুধে নালীগুলো বড় হয়ে যায় স্বাভাবিক হতে প্রায়ই এক
ঘন্টা সময় লাগে। এর জন্য দাঁড়িয়ে থেকে গাভীকে খাদ্য খাওয়াতে ব্যস্ত রাখতে
হবে।
লেখকের মন্তব্য
ম্যাসটাইটিস রোগটি হচ্ছে গাভীর ওলান ফুলে যাওয়া বা শক্ত হয়ে যাওয়া।
ম্যাসটাইটিস রোগটি হয়ে থাকে অপরিষ্কার বাট থাকলে। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো
পরিষ্কার বাটে লেগে থাকে। তাই দুধ দোহানোর সময় বাটের মধ্যে প্রবেশ করে সারা
জীবনের জন্য গাভীর বাটটাকে নষ্ট করে। রোগের কারণে অনেক সময় গাভীর মৃত্যু হয়ে
থাকে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি বুঝতে পেরেছেন ডেইরি খামারে ম্যাসটাইটিস বাঁচার উপায় রোগ
থেকে বাঁচার উপায় গুলো কি কি। যদি আমার আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট
বক্সে গিয়ে আপনার মতামত জানাতে পারেন। আরো সুন্দর পোস্ট পেতে আমার পেজটিকে ভিজিট
করে আসতে পারেন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার আছে কিন্তু পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url