সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। কিছু কিছু তেল জাতীয় বিজে যথেষ্ট পরিমাণে তেল থাকে। না শীত না গরম এরকম অঞ্চলে তেল জাতীয় ফসল ভালো জন্মে। আমাদের দেশে রান্নার কাজে তেল ব্যবহার করে থাকি। দৈনন্দিন জীবনে তেল আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


দৈনন্দিন জীবনে তেল জাতীয় ফসল চাষ করার পদ্ধতি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তেল জাতীয় ফসল গুলোর মধ্যে হচ্ছে সূর্যমুখী, সরিষা, চিনা বাদাম ইত্যাদি। সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি। 

ভূমিকা

বাংলাদেশের মাটি তেল জাতীয় ফসল চাষের জন্য উপযোগী। কিন্তু ভালো মানের বীজের কারণে তেল জাতীয় ফসল চাষ করে অনেকেই লাভমান হতে পারেন না। আমাদের দেশে তেল বীজ ফসলের উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ভাল ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার তেল আমদানি করতে হয়। বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে তেজ জাতীয় ফসলের চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করে আবার উৎপাদন বৃদ্ধি করা আবশ্যক।

সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি

সূর্যমুখী চাষের জন্য মাটির প্রয়োজন খরা ও লবণাক্ত মাটি এবং মাটির অম্লমান ৬.৫-৮.৫ থাকা ভালো। সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায় তবে ডিসেম্বর এবং নভেম্বরের মধ্যে হতে ও আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে হতে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখী চাষ করার জন্য মৌসুম অনুসারে ফসল ৯০ থেকে ১০০ দিন সময় লাগে। ভালোভাবে বিজ সংরক্ষণ করে সাবধানতার সাথে রোদে বীজগুলো শুকাতে হবে।
বীজের আর্দ্রতা ৮-৯% হলে সে অবস্থায় বীজ ঠান্ডা করে চটের বস্ত অথবা ডলির মধ্যে রাখতে হবে। চারা গজলে দিক থেকে ২৫ দিন পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত গাছ থাকলে গাছগুলো তুলে ফেলে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। প্রথম সেচ বীজ বপণের পর গাছে ফুল আসার আগে ৩০ দিন পর সেচ দিতে হবে।

সূর্যমুখী ফসলের চাষ

সূর্যমুখী ডালপালা বিহীন নরম দন্ডাকার কান্ডবিশিষ্ট বৃত্তাকার পাতা সমৃদ্ধ একটি তেলের ফসল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সূর্যমুখীর চাষ ব্যাপক পরিমাণে হয়। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় তম প্রধান তেল বিশিষ্ট ফসল। সূর্যমুখী উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে রাশিয়া, ভারত, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র, ইথিওপিয়া। সূর্যমুখী তেলের মধ্যে থাকে উৎকৃষ্ট মানের লিনোলিক অ্যাসি ড সমৃদ্ধ ৫৫% এবং অপ্রয়োজনীয় ইরোসিক এসিড মুক্ত।

১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, জামালপুর জেলায় এই সূর্যমুখী চাষ ব্যাপক পরিমাণে চাষ হচ্ছে।

তেল জাতীয় ফসল চাষ করার পদ্ধতি

তেল জাতীয় ফসল চাষ করার জন্য মাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দোআঁশ ও বেলেদোআঁশ মাটিতে তেল জাতীয় ফসল চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তেল জাতীয় ফসল গুলো প্রায়ই সারা বছর চাষ করা যায়। রবি মৌসুমে নভেম্বর ডিসেম্বর এর মধ্যে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তেল দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। চর্মরোগ প্রতিরোধ এবং শরীরের ক্ষয় পণ বৃদ্ধিতে তেলবেশ উপকারি। তেল জাতীয় ফসল জমি থেকে ক্ষতিকর ভারী মৌল শোষণ করে জমির উর্বরতা বাড়ায়।

তেল জাতীয় ফসলের গুরুত্ব

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই তেল উৎপাদন করা হয়। বাংলাদেশ গড়ে ৭০০ কেজি হেক্টর তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন করা হয়। চর্বি জাতীয় খাদ্য হিসেবে দৈনন্দিন জীবনে ও মানব দেহে তেলের গুরুত্ব অপরিহার্য। পুষ্টিবিদদের মতে একজন মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য শক্তির ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট তেল থেকে আসা উচিত। এবং ভারতীয় পুষ্টিবিদদের মতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের গড়ে ২০ গ্রাম সমান তেল খাওয়া উচিত। সুতরাং তেল জাতীয় ফসলের গুরুত্ব বাহুল্য।

শেষ কথা

তেল জাতীয় ফসল চাষ করলে বেশ লাভবান পাওয়া যায়। সূর্যমুখী চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছে। সূর্যমুখী খরা এবং লবণাক্ত মাটিতে ভালো জন্মে। রোদে শুকানোর পর ভিজে জমিতে বপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আপনাদের মাঝে সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url